ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৮ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছুটির দিনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
ছুটির দিনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক  ...

চট্টগ্রাম: ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকেন। তবে ব্যতিক্রম চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান।

 

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান জেলা প্রশাসক।  

পুরো সাপ্তাহ জুড়েই রাষ্ট্রীয় ও দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকেন জেলা প্রশাসক।

তাই শুক্রবার উৎসবের অষ্টম দিনের আয়োজনটি ছিল প্রতিবন্ধী ও এতিম শিশুদের নিয়ে। বেলা ১১টার দিকে সরকারি শিশু পরিবার, উপলব্ধি এবং সীতাকুণ্ড প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের প্রায় দুই শতাধিক শিশু ফুল উৎসবে আসে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান এতিম ও প্রতিবন্ধী এই শিশুদের নিয়ে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান। তিনি শিশুদেরকে টিউলিপসহ বিভিন্ন ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বাগানে ঘুরেন। তাদের নিয়ে নাগরদোলায় চড়েন, কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণ করেন বিশাল দিঘীতে। সবশেষে তাদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজেও অংশ নেন।  

শিশুরা জানান, ডিসি স্যার আমাদের সঙ্গে এখানে এসেছেন, ফুল দেখিয়েছেন, বেড়িয়েছেন আমাদের সাথে, আনন্দ দিয়েছেন। আমরা খুবই আনন্দিত। এখানে এসে বিভিন্ন ফুল দেখে আমাদের খুব ভাল লেগেছে। আমরা নৌকায় ঘুরেছি। সবাই মিলে কায়াকিং করেছি, অনেক ফুলের নাম জেনেছি। আমাদের মতো প্রতিবন্ধীদের কথা কেউ ভাবেন না, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের জন্য আজকে আয়োজন করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ।

এদিকে এমন উদ্যোগকে অনন্য এক দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন চট্টগ্রামবাসী।

তারা বলছেন, ছুটিন দিনে সবাই যখন পরিবার বা নিজের কাজে ব্যস্ত ঠিক তখনই চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের এক মহৎ উদ্যোগ। এত বিশাল জায়গা জুড়ে শুধু ফুলের বাগান চট্টগ্রামের অন্য কোথাও নেই। আমরা চাই যেন মাঝে মাঝে আমাদের এসকল এতিম বাচ্চাদের নিয়ে এখানে আসতে পারি। এ রকম একটি পার্ক শিশুদের মানসিক বিকাশে ভুমিকা রাখবে।

সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ফুল উৎসবে ডিসি স্যার সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদেরকে নিয়ে ঘুরে আনন্দ দেন এবং তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা জানার চেষ্টা করেন। এটি স্যারের একটি ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় আয়োজন।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, এ সকল পিতৃ-মাতৃহীন এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা আমাদের সমাজেরই অংশ। তাদেরকে বাদ দিয়ে কোনোভাবেই সামষ্টিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা ড. সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীও এ সকল শিশুদের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। আমরা অবশ্যই শিশুবান্ধব ও প্রতিবন্ধীবান্ধব পার্ক হিসেবে এই ডিসি পার্ককে গড়ে তুলব এবং তারা যেন প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এখানে আসতে পারে, খেলাধুলা করতে পারে সে ব্যবস্থা করব।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাকিব হাসান, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও প্রতিক দত্ত উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি১৭, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Alexa