ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১১ মহররম ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুতে আরো একজনের মৃত্যু, জুনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৬৯৯

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৯
ডেঙ্গুতে আরো একজনের মৃত্যু, জুনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৬৯৯ ডেঙ্গু মশা

ঢাকা: ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে নিগার নাহিদ দিপু নামে একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এবছরের মধ্যে জুন মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৯৯ জন। 

বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে।

এছাড়া জানুয়ারি থেকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ জন।  

ডা. নিগার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৩২ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। সবশেষ তিনি রাজধানীর কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছিলেন।

স্কয়ার হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ার সূত্রে জানা যায়, সকালে জরুরি বিভাগ থেকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয় ডা. নিগারকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় তার মৃত্যু হয়।

তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আকতার এ মৃত্যুর বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।  

তিনি জানান, ডা. নিগার গত ১ জুলাই দিনগত রাত দেড়টায় প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ ধরা পড়ে। ভর্তির পর তার রক্তে প্লাটিলেট ছিল ১১ হাজার। পপুলারে কয়েক ঘণ্টার চিকিৎসায় প্লাটিলেট ১৫ হাজার হয়। ওইদিন দুপুরে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলেও চিকিৎসায় তিনি কিছুটা সুস্থ হন। রাত ১টার দিকে আরেকবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বুধবার (৩ জুলাই) সকালে স্কয়ারে নেওয়া হলে আরেকবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে তিনি মারা যান।

এদিকে কন্ট্রোলরুম সূত্রে আরো জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে মোট ৮৩ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। তবে এর বাইরেও আরো রোগী থাকতে পারে। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ২৬২ জন রোগী। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৯ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ৪৫ জন, মে'তে ১৫৩ এবং জুনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৯৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া জুলাইতে এই তিন দিনে গড়ে ৮০ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন।  

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকদের (আইইডিসিআর) মতে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সময় মূলত জুন থেকে বা বর্ষার শুরু থেকে শুরু হয়। সেক্ষেত্রে প্রথম মাসেই এতো রোগী হওয়াটা যথেষ্ট অ্যালার্মিং বিষয়। মূলত সচেতনতার অভাবেই এ রোগ বাড়ছে। বৃষ্টির পানি বাসার আশপাশে কোথাও জমে থাকতে দেওয়া যাবে না। কেননা ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। তাই বাসার ফুলের টবসহ এমন কোনো জায়গা রাখা যাবে না যেখানে পানি জমে থাকতে পারে। তাছাড়া এই মশা দিনেরবেলায় কামড়ায়। তাই শুধু রাতে না দিনের বেলাতেও মশা থেকে সাবধান থাকতে হবে। আর এসময় জ্বর হলেই নিকটস্থ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বিলম্ব করা যাবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
এমএএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Alexa