ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১১ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

সেন্টাল রোডে শিশু গৃহকর্মী হত্যা

শিগগিরই গ্রেপ্তার হচ্ছে ‘ডাইনি’ গৃহকর্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
শিগগিরই গ্রেপ্তার হচ্ছে  ‘ডাইনি’ গৃহকর্ত্রী

ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগান সেন্ট্রাল রোডে শিশু গৃহকর্মীর হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন পলাতক গৃহকর্ত্রী সাথী পারভিন ডলি ‘ডাইনি’ হিসেবে পরিচিত। একই বাড়ির আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্ক তো দূরের কথা, এলাকার দোকানদারদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল না।

সাথীর  উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও চলাফেরাসহ নানা কারণে তার স্বামী ডাক্তার রাহাত তাকে তালাক দেন।

রোববার (২৭ আগস্ট) রাত পোনে ৮টার কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এখনও শিশুটির নাম ঠিকানা জানা যায়নি। তবে পুলিশ বাদী হয়ে আজকে দুপুরের দিকে একটি হত্যা মামলা করেছে। আশা করছেন শিগগিরই সাথী পারভিন ডলিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি শিশু হত্যার রহস্য জানা যাবে।

তিনি আরও জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পুরাতন নতুন মিলে নির্যাতনের আঘাত দেখা গেছে। এ নির্মম নির্যাতনের কারণেই শিশুটি মারা গেছে। সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতো সাথী পারভিন ডলি। ঘটনার পরপরই যশোরে অবস্থান করা তাকে তালাক দেওয়া স্বামী  রাহাতের সঙ্গে পুলিশ কথা বলেছে। তিনি পুলিশকে জানান,  উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাসহ নানা কারণে সাথী পারভিনকে তিনি তালাক দিয়েছেন। একটি মামলা চলমান থাকায় সাথী তার স্বামীর ফ্ল্যাটটি দখল করে একাই থাকতো।

তিনি জানান, ওই ফ্ল্যাট ভবন যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তারাও এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন তারা নিজেরাই আদালতে গিয়ে সাক্ষী দেবেন যেন সাথির সর্বোচ্চ সাজা হয়।  

গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার আগে কোনো এক সময় ওই শিশু গৃহকর্মীকে হত্যার পর সাথী পারভিন ডলি তার নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরদিন শনিবার (২৬ আগস্ট) সেন্ট্রাল রোডের বাসায় গিয়ে মিস্ত্রির মাধ্যমে দরজার তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে  ওই শিশু গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিকভাবে তদন্তে প্রমাণ হয়েছে, ওই শিশুকে গৃহকর্ত্রী পলাতক সাথি হত্যা করেছে।  

সেন্ট্রাল রোডের ওই বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মফিজুর রহমান জানান, সাথী পারভীনের সঙ্গে ফ্ল্যাটের কারোর সম্পর্ক ছিল না। কারণ তার  উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা ও মুখের ভাষা এতটাই খারাপ সবাই তাকে এড়িয়ে চলতো।  

ওই বাসায় গত দুই বছর ধরে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন মফিজুর। এ দুই বছরে দুইবার দেখেছেন সাথী তার নিজের শিশু সন্তানসহ ওই শিশু গৃহকর্মীকে নিয়ে বের হতে। তিনি ধারণা করছেন, যেহেতু সাথীর বাড়ি পাবনা জেলায়। দেশের বাড়ি থেকে শিশু গৃহকর্মীকে নিয়ে এসে ছিলেন তার শিশু সন্তানকে দেখাশোনার জন্য। বাসায় দুই শিশুকে রেখে প্রতিদিন সকালে সাথি বেরিয়ে যেত কর্মস্থলের উদ্দেশে। আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসতো। আসলে সাথী পারভিন চাকরি করতো কিনা সেটি জানা যায়নি।

এদিকে রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরের দিকে শিশু গৃহকর্মীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। এর আগে কলাবাগান থানা পুলিশ শিশু গৃহকর্মীর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। সেখানে পুলিশ উল্লেখ করেছে, শিশুটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়া শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।  

এদিকে মর্গ সূত্রে জানা যায়, শিশুটির শরীরে অসংখ্য পুরাতন আঘাতে চিহ্ন দেখা গেছে। এ আঘাতগুলো নির্যাতনের কারণে। ময়নাতদন্তের সময় তার শরীর থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল রোডে বাসায় মিলল শিশু গৃহকর্মীর মরদেহ, পালিয়েছেন গৃহকত্রী

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
এজেডএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ

Alexa